গর্ভাবস্থায় ৭ সপ্তাহ মানে হচ্ছে দুই মাসের একটু কম। এ সময়ের লক্ষণগুলি অনেকটা মিসড পিরিয়ডের মতো। এ সময়ে বমিবমি লাগা, ব্যাক পেইন হওয়া, ফুসকুড়ি এগুলা দেখা দিতে পারে। সবগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
৭ সপ্তাহে শিশু কেমন হয়?
এই সপ্তাহে বাচ্চা ৮ মি. মি. এর মত লম্বা হয়। বাচ্চার হাড়ের গঠন শুরু হয়। শিশু এই সময় বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এখন তার ‘লিম্ব বাড’ দেখলে বুঝতে পারা যাবে যে সেগুলি পরে হাত ও পায়ের আকার ধারণ করবে। শিশুর শরীরের অনেক অংশের বিকাশ হতে থাকে যেমন, হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, অন্ত্র, বৃহদন্ত্রের উপাঙ্গ, মস্তিষ্ক, সুষুম্না, নাক, চোখ, মুখমন্ডল ইত্যাদি। এই সময় কাউকে দেখে গর্ভাবতী মনে না হলেও শরীরের পরিবর্তনগুলি অনুভব করতে পারে।
৭ সপ্তাহে মায়ের কিছু লক্ষণঃ
- Breast Changes (স্তনের পরিবর্তন)
- Slight Bleeding (সামান্য রক্তপাত)
- Morning Sickness ( সকালের দিকে অসুস্থ্যবোধ)
- Weight Fluctuations (ওজন বৃদ্ধি)
- Increased Vaginal Discharge (স্রাব ভাঙা বেশি হওয়া)
- Bloating (পেট স্ফীত হত্তয়া)
এ সপ্তাহে শারীরিক পরিবর্তন
- এই সময়ে মায়েরা সব কিছুতে আস্টে গন্ধ পেতে পারে আর খাবারে অরুচি দেখা দেয়। দিনের শুরুর দিকে মানে সকালে বমি বমি ভাব লাগা আর অসুস্থ্যতা লক্ষণীয়।
- কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এসময় শরীরের বিভিন্ন হরমোন চেঞ্জ হয় যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
- যেহেতু জরায়ু আকারে বড় হতে শুরু করে ফলে এর চাপে ঘন ঘন প্রসাবের বেগ আসে।
- স্তন আকার বৃদ্ধি পেতে পারে। আগের চাইতে বেশী সেন্সিটিভ হয়ে উঠতে পারে।
- বুকে হালকা জ্বলা-পোড়া হতে পারে।
এই সপ্তাহে আপনার করনীয় কি?
- কখনোই একদম খালি পেটে থাকবেন না।
- খালি পেটে বমি বমি ভাব উদ্রেক হবে।
- হাতের কাছে সবসময় কিছু হাল্কা খাবার রাখুন, এবং দিনে তিনবারের (ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনার) বদলে অল্প পরিমাণে বারবার খাবার খান।
- ব্লাড সুগার লেভেল যাতে ড্রপ না করে তার জন্য কিছু প্রোটিন-যুক্ত খাবার যেমন পণির, চীজ় দিয়ে বিস্কুট খেতে পারেন।
- এইসময় আপনার জরায়ুর উপর শ্লৈষ্মিক পদার্থ পুরু হয়ে একটি রোধনী সৃষ্টি করে যেটা আপনার জরায়ুকে আপনি প্রসব না করা পর্যন্ত সংরক্ষিত রাখে। প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলার শরীর কিছুটা ভিন্ন গতিতে বদলায়।
- যদি আপনি আগে একবার সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেন তাহলে প্রথমবারের তুলনায় এবার একটু আগে থেকেই আপনাকে দেখলে বোঝা যাবে যে আপনি অন্তঃসত্ত্বা।
- আপনি ক্লান্ত, খিটখিটে এবং খামখেয়ালী বোধ করতেও পারেন আবার নাও করতে পারেন।
এই সপ্তাহে আপনার জন্য পরামর্শ:
গর্ভবতী মায়ের শরীরে ভিটামিন ও মিনারেল এর অভাব থাকলে তা শিশুর শরীরেও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অতিরিক্ত মিনারেল ও ভিটামিন গ্রহণ করতে পারেন।
গর্ভবতী মায়েদের মন প্রফুল্ল থাকলে গর্ভস্থ শিশুর মানসিক বিকাশ সুষ্ঠু এবং স্বাভাবিক হয়। এ সময় পরিবারের সবার উচিত গর্ভবতী মাকে মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করা।