মাতৃগর্ভের ভিতরে শিশুটি যে তরল পদার্থের ভেতরে ভাসমান অবস্থায় থাকে তাকেই এমনিওটিক ফ্লুইড (amniotic fluid)বলে। এটা খুব স্বচ্ছ একটি তরল পদার্থ যার সবটুকু জুড়েই আছে শুধু পানি, এছাড়াও এতে রয়েছে প্রোটিন, গ্লুকোজ, ইউরিয়া, ইউরিক এসিক,আলফা ফেটো প্রোটিন সহ বিভিন্ন ধরনের হরমোন।
এমনিওটিক ফ্লুইড (amniotic fluid) গর্ভবতী মায়ের গর্ভের ফুল (Placenta) থেকেই নি:সৃত হয়। সাধারনত গড়ে গর্ভে ৪০০ মিলি থেকে ১৫০০ মিলি এমনিওটিক ফ্লুইড থেকে থাকে। গর্ভধারনের প্রথম ১০ সপ্তাহে অন্তত ৩০ মিলি, ২০ সপ্তাহে অন্তত ৩০০ মিলি এবং ৩০ সপ্তাহে অন্তত ৬০০ মিলি এমনিওটিক ফ্লুইড থাকা স্বাভাবিক। গর্ভের ৩৮ সপ্তাহ পর্যন্ত এমনিওটিক ফ্লুইড এর পরিমান বাড়তে থাকে এবং এর পরে তা কমতে থাকে। এই এমনিওটিক ফ্লুইড এর পরিমান যদি কম অথবা বেশি হয় তবে শিশুটির বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
এমনিওটিক ফ্লুইড (amniotic fluid)এর ফলে গর্ভের শিশুটি হঠাৎ কোনো ধাক্কা কিংবা বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা পায়। এছাড়াও এই তরল পদার্থটির কারনে শিশুর নড়াচড়া করা অনেক সহজ হয়, নির্দিষ্ট এবং আরামদায়ক তাপমাত্রায় শিশুটি সুরক্ষিত থাকে। গর্ভে থাকাকালীন শিশু এই তরল পদার্থটি পান করে থাকে আবার এতেই সে মুত্রত্যাগ করে ও মলত্যাগ করে। এজন্য এমনিওটিক ফ্লুইড পরীক্ষা করলে শিশুর বিপাকের অনেক কিছুর প্রমান কিংবা স্বাক্ষর পাওয়া যায়।
এমনিওসেন্টেসিস /Amniocentesis প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমনিওটিক ফ্লুইড (amniotic fluid) মাতৃগর্ভ থেকে সংগ্রহ করা হয় এবং বিভিন্ন পরীক্ষা করে গর্ভের শিশুটি কেমন আছে তা জানা যায়। এর মাধ্যমে ক্রোমোজোম স্টাডি করে কিংবা কেমিক্যাল পরীক্ষা বা টিস্যু কালচার করে গর্ভের শিশুটির প্রতিবন্ধি হবার কোন সম্ভাবনা আছে কিনা তাও জানা যায়।