যারা দীর্ঘদিন ধরে বাচ্চা নেয়ার জন্য চেষ্টা করছেন কিন্তু এখনও সফল হয় নি, তারা অনেকেই এক, দুই মাস চেষ্টার পরে হতাশায় ভুগতে থাকে এখানে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। যেসব দম্পতি টানা একবছর ধরে চেষ্টা করে আসছেন কিন্তু সফল হতে পারেন নাই তারা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
আমাদের সমাজে কোন কোন ক্ষেত্রে এখনও বন্ধ্যাত্ব বা বাচ্চা না হওয়ার দোষ সম্পূর্ণরুপে নারীদের উপরে দেয়া হয়। কিন্তু বন্ধ্যাত্ব বা বাচ্চা না হওয়ায় স্বামী কিংবা স্ত্রী দুজনেরই ভূমিকা রয়েছে।
নানা সমস্যার কারণে গর্ভধারণ বাধাপ্রাপ্ত হয়। স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের কিংবা যে কোন একজনের সমস্যা থাকলে সাধারনত গর্ভধারণ হয় না।
পুরুষদের ক্ষেত্রে কারন সমূহ :
- কম সংখ্যক শুক্রাণু উৎপন্ন হলে
- শুক্রাণু নির্দিষ্ট বেগে গতিশীল না হলে
- স্পার্ম বা শুক্রাণু আকৃতিগত দিক থেকে স্বাভাবিক না হলে
- বিভিন্ন যৌনবাহিত রোগের কারণে স্পার্ম বা শুক্রাণুর সংখ্যা এবং গতিশীলতা কমতে থাকলে
- বয়স জনিত (সাধারনত ৪০ এর পর) কারনে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে
- বিশেষ কিছু ঔষধ সেবন অথবা রাসায়নিক দ্রব্যের প্রভাবে অন্ডকোষের কর্মক্ষমতা কমে গেলে
- অন্ডকোষ আঘাতপ্রাপ্ত হলে
- রেডিয়েশন বা বিকিরণের কারনে শুক্রাণুর উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হলে
- পিটুইটারী গ্রন্থির সমস্যা হলে
- থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা হলে
- ডায়াবেটিস কিংবা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে
- অন্ডকোষের লেডিগ সেল এবং সারটোলি সেলের সমস্যা থাকলে
- কোন সংক্রমণ কিংবা আঘাতের ফলে শুক্রাণু বের হবার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে
- উশৃঙ্খল জীবনযাপন, ধূমপান কিংবা আজেবাজে নেশা করলে
- পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হলে
- গরমে এক নাগাড়ে কাজ করলে এবং টাইট আন্ডারওয়্যার পড়লে
- মানসিক চাপ কিংবা দুশ্চিন্তা করলে
- নিয়মিত বিষন্নতা এবং ঘুমের ঔষধ সেবন করলে
- উচ্চতা অনুযায়ী অতিরিক্ত ওজন হলে
মহিলাদের ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের কারন সমূহ :
- ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বের না হলে কিংবা বের হলেও সেসব ডিম্বাণুর আকৃতি স্বাভাবিক না হলে
- হরমোন জনিত কারনে
- ডিম্বনালীর গঠনে কোন সমস্যা থাকলে
- জরায়ুর মধ্যের আস্তরণ জরায়ুর ভিতরের অংশ অতিক্রম করে তা ডিম্বনালী, ডিম্বাশয় কিংবা জরায়ুর পিছন দিকে চলে গেলে
- জরায়ুতে টিউমার হলে
- জন্মগতভাবে জরায়ুতে কোন ত্রুটি থাকলে
- অকালে রজ:নিবৃত্তি কিংবা মেনোপজ হলে
- যোনির মুখে সমস্যা থাকলে
- ডায়াবেটিস কিংবা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে
- পিটুইটারী গ্রন্থির মধ্যে কোন সমস্যা হলে
- থাইরয়েড হরমোনে কোন তারতম্য হলে
- কোন সংক্রমণ কিংবা আঘাতের ফলে শুক্রাণু ভেতরে যাবার পথ বন্ধ হয়ে গেলে
- উশৃঙ্খল জীবনযাপন, ধূমপান কিংবা আজেবাজে নেশা করলে
- পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হলে
- মানসিক চাপ কিংবা দুশ্চিন্তা করলে
- নিয়মিত বিষন্নতা এবং ঘুমের ঔষধ সেবন করলে
- উচ্চতা অনুযায়ী অতিরিক্ত ওজন হলে
যৌথকারণ :
- সঠিক পদ্ধতিতে দৈহিক মিলন এবং উর্বর সময় সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব থাকলে
- মারাত্মক পুষ্টিহীনতা
- সহবাসের পর দ্রুত ধুয়ে ফেললেও শুক্রানু ভিতরে যেতে পারে না
বন্ধ্যাত্বের কারণগুলো থেকে দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে মহিলা, ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষ এবং ১০-২০ শতাংশ ক্ষেত্রে উভয়ের কারনে গর্ভধারণ হয় না। বাকি ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো সঠিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। যদিও এখনো আমাদের দেশে গর্ভধারণ না করার জন্য শুরুতেই মেয়েদের দায়ী করা হয়।